রাজশাহী জেলা সমিতি, ঢাকা

Rajshahi Zilla Samity, Dhaka

Image
রাজশাহী জেলা পরিচিতি

রাজশাহী জেলা বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সীমান্তবর্তী একটি জেলা ও বিভাগীয় শহর। এটা রাজশাহী বিভাগের সবচেয়ে বৃহত্তম ও প্রধান প্রশাসনিক অঞ্চল। অবস্থানগত কারণে এটি বাংলাদেশের একটি বিশেষ শ্রেণীভুক্ত জেলা। রাজশাহী জেলা বাংলাদেশের পুরাতন জেলাগুলোর অন্যতম প্রধান একটি জেলা। আমের রাজ্য হিসেবে ছাড়াও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন জেলা হিসেবে দেশব্যাপী বিখ্যাত রাজশাহী। এছাড়াও সব ধরনের শাক-সবজি উদ্বৃত্তের কারণে রাজশাহীকে সবজিভান্ডার বলা হয়। প্রায় সব ধরনের ফল ও ফসল উৎপাদনে রাজশাহী সারাদেশে বিশেষ পরিচিত এবং শ্রেষ্ঠত্বের দাবিদার। একইসাথে দেশের সর্বোচ্চ পান উৎপাদন হয় রাজশাহীতে। রাজশাহীকে শিক্ষা নগরী এবং রেশমের নগরীও বলা হয়।

অবস্থান ও আয়তন

রাজশাহী জেলার উত্তরে নওগাঁ জেলা, দক্ষিণে কুষ্টিয়া জেলা,পদ্মা নদী ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, পূর্বে নাটোর জেলা, পশ্চিমে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা।[১] দেশের প্রধানতম নদী পদ্মা এই জেলার সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। এই জেলার মোট আয়তন ২৪০৭.০১ বর্গকিলোমিটার।

নামকরণ ইতিহাস

এই জেলার নামকরণ নিয়ে প্রচুর মতপার্থক্য রয়েছে। তবে ঐতিহাসিক অক্ষয় কুমার মৈত্রেয়র মতে রাজশাহী রাণী ভবানীর দেয়া নাম। অবশ্য মিঃ গ্রান্ট লিখেছেন যে, রাণী ভবানীর জমিদারীকেই রাজশাহী বলা হতো এবং এই চাকলার বন্দোবস্তের কালে রাজশাহী নামের উল্লেখ পাওয়া যায়। পদ্মার উত্তরাঞ্চল বিস্তীর্ন এলাকা নিয়ে পাবনা পেরিয়ে ঢাকা পর্যন্ত এমনকি নদীয়া, যশোর, বর্ধমান, বীরভূম নিয়ে[২] এই এলাকা রাজশাহী চাকলা নামে অভিহিত হয়। অনুমান করা হয় ‘রামপুর’ এবং ‘বোয়ালিয়া’ নামক দু’টি গ্রামের সমন্বয়ে রাজশাহী শহর গ’ড়ে উঠেছিল। প্রাথমিক পর্যায়ে ‘রামপুর-বোয়ালিয়া’ নামে অভিহিত হলেও পরবর্তীকালে রাজশাহী নামটিই সর্ব সাধারণের নিকট সমধিক পরিচিতি লাভ করে। বর্তমানে আমরা যে রাজশাহী শহরের সঙ্গে পরিচিত, তার আরম্ভ ১৮২৫ সাল থেকে।তার আগে রাজশাহী জেলার সদরদপ্তর ছিল বর্তমান নাটোর শহর এলাকায়।নারদ নদের নাব্য সংকটের কারণে তৎকালীন রামপুর-বোয়ালিয়া পদ্মানদীর তীরবর্তী এলাকায় রাজশাহীর সদর ও প্রসাশনিক এলাকা ব্রিটিশরা স্থাপন করেন।[৩] রাজাশাহী শব্দটি বিশ্লেষণ করলে দুটি ভিন্ন ভাষার একই অর্থবোধক দুটি শব্দের সংযোজন পরিলতি হয়। সংস্কৃত ‘রাজ’ ও ফারসি ‘শাহ’ এর বিশেষণ ‘শাহী’ শব্দযোগে ‘রাজশাহী’ শব্দের উদ্ভব, যার অর্থ একই অর্থাৎ রাজা বা রাজা-রাজকীয় বা বাদশাহ বা বাদশাহী। তবে বাংলা ভাষায় আমরা একই অর্থের অনেক শব্দ দু-বার উচ্চারণ করে থাকি। যেমন শাক-সবজি, চালাক-চতুর, ভুল-ভ্রান্তি, ভুল-ত্র“টি, চাষ-আবাদ, জমি-জিরাত, ধার-দেনা, শিক্ষা-দীক্ষা, দীন-দুঃখী, ঘষা-মাজা, মান-সম্মান, দান-খয়রাত, পাহাড়-পর্বত, পাকা-পোক্ত, বিপদ-আপদ ইত্যাদি। ঠিক তেমনি করে অদ্ভুত ধরনের এই রাজশাহী শব্দের উদ্ভবও যে এভাবে ঘটে থাকতে পারে তা মোটেই উড়িয়ে দেয়া যায় না। এই নামকরণ নিয়ে অনেক কল্পকাহিনীও রয়েছে। সাধারণভাবে বলা হয় এই জেলায় বহু রাজা-জমিদারের বসবাস, এজন্য এ জেলার নাম হয়েছে রাজশাহী। কেউ বলেন রাজা গণেশের সময় (১৪১৪-১৪১৮) রাজশাহী নামের উদ্ভব। ১৯৮৪ সালে বৃহত্তর রাজশাহীর ৪ টি মহকুমাকে নিয়ে রাজশাহী, নওগাঁ, নাটোর এবং নবাবগঞ্জ- এই চারটি স্বতন্ত্র জেলায় উন্নীত করা হয়। নবাবগঞ্জ জেলা পরবর্তীকালে চাঁপাইনবাবগঞ্জ নামকরণ করা হয়।

শিক্ষাব্যবস্থা

রাজশাহীতে একটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, একটি প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, একটি মেডিকেল কলেজ, একটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়,৪ টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, ৩ টি সাধারণ বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, একাধিক ঐতিহ্যবাহী কলেজ (রাজশাহী কলেজ, রাজশাহী নিউ গভঃ ডিগ্রী কলেজ, রাজশাহী সরকারি সিটি কলেজ, রাজশাহী সরকারি মহিলা কলেজ), কারিগরী মহাবিদ্যালয়, একটি টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউট, একটি ক্যাডেট কলেজ, দুইটি সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট সহ আরও অসংখ্য সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে।

সংবাদপত্র ও প্রেসক্লাব

রাজশাহী জেলা থেকে সোনালী সংবাদ, সানশাইন, দৈনিক বার্তা, সোনার দেশ, নতুন প্রভাত এবং আমাদের রাজশাহী সহ অনেকগুলি বাংলা দৈনিক পত্রিকা প্রকাশিত হয়। এছাড়াও অনলাইন নিউজ পোর্টাল যেমন - সত্যের সকাল ডটকম, দ্য ক্যাম্পাস, সাহেব-বাজার টোয়েন্টিফোর ডটকম, সিল্কসিটিনিউজ ডটকম, উত্তরবঙ্গ প্রতিদিন, পদ্মাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকম, উত্তরকাল ইত্যাদি সংবাদপত্র রয়েছে। সরকার পরিচালিত বাংলাদেশ টেলিভিশন এবং বাংলাদেশ বেতারের রাজশাহীতে ট্রান্সমিশন কেন্দ্র রয়েছে।[৪][৫][৬] একটি স্থানীয় এফএম রেডিও স্টেশন, রেডিও পদ্মা ৯৯.২ মেগাহার্টজ ফ্রিকোয়েন্সি এবং রেডিও ফুর্তি ৮৮.০ মেগাহার্টজে সম্প্রচার করে। রাজশাহী মহানগরীতে ৫ টি প্রেসক্লাব রয়েছে - রাজশাহী প্রেসক্লাব,রাজশাহী বরেন্দ্র প্রেসক্লাব, রাজশাহী মেট্রোপলিটন প্রেসক্লাব, রাজশাহী মডেল প্রেসক্লাব এবং রাজশাহী সিটি প্রেসক্লাব।

রাজশাহী জেলার উপজেলা সমূহ

  1. গোদাগাড়ী উপজেলা
  2. তানোর উপজেলা
  3. মোহনপুর উপজেলা
  4. বাগমারা উপজেলা
  5. দুর্গাপুর উপজেলা, রাজশাহী
  6. বাঘা উপজেলা
  7. চারঘাট উপজেলা
  8. পবা উপজেলা
  9. পুঠিয়া উপজেলা

রাজশাহী জেলার পৌরসভা সমূহ

  1. বাঘা পৌরসভা
  2. আড়ানী পৌরসভা
  3. চারঘাট পৌরসভা
  4. পুঠিয়া পৌরসভা
  5. কাটাখালী পৌরসভা
  6. নওহাটা পৌরসভা
  7. কাঁকনহাট পৌরসভা
  8. গোদাগাড়ী পৌরসভা
  9. মুন্ডুমালা পৌরসভা
  10. তানোর পৌরসভা
  11. দুর্গাপুর পৌরসভা
  12. ভবানীগঞ্জ পৌরসভা
  13. তাহেরপুর পৌরসভা
  14. কেশরহাট পৌরসভা

উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব

উল্লেখযোগ্য স্থান